বন্ধক নামা কিভাবে লেখা হয়/ How to write a general mortgage

 
বন্ধক নামা দলিল

একটি কার্যকর বন্ধক নামা কিভাবে লেখা হয় ?

বন্ধক নামা একটি আইনগত দলিল, যা সম্পত্তি বন্ধক রাখার জন্য লেখা হয়। এটি একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের সময় সম্পত্তি বন্ধক রাখার শর্তাবলী, দায়িত্ব ও অধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়। বন্ধক নামা লিখতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন 

বর্তমান সময়ে আমরা সবাই কম বেশি ঋণ গ্রহণ/লেন দেন করে থাকি। এক্ষেত্রে দেখা যায় জমি জমা ছাড়া অনেক কিছুই মানুষ বন্ধক রাখতে পারে, আর সেই বন্ধক কে বিশ্বাস যোগ্য করতে বন্ধক দাতা ও বন্ধক গ্রহিতার মধ্যে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে উভয়ের সম্মতিতে স্ট্যাম্প বা কার্টিজে লিখিত আকারে চুক্তি/অঙ্গিকার সমূহ লেখা হয় তাই বন্ধক নামা দলিলঃ- 

বন্ধক নামা লেখার জন্য কত টাকার স্ট্যাম্প ?

বন্ধক নামা লেখার জন্য প্রয়োজন নন-জুডিশিয়াল ৩০০/- টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প যা পাওয়া যাবে স্ট্যাম্প বিক্রেতার নিকট অথবা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন সনদ প্রাপ্ত ভেন্ডারদের নিকট-

কিভাবে লিখবেন বন্ধক নামা 

বন্ধক নামা লেখার জন্য একজন আইন বিশেষজ্ঞ উকিল অথবা লাইসেন্স প্রাপ্ত দলিল লেখক প্রয়োজন এমনকি আপনি চাইলে কোন ভালো কম্পিউটার অপারেটরের নিকট হইতে আপনার নাম ঠিকানা ও জমির দাগ, খতিয়ান, জমির পরিমান দিয়ে নিম্নের মতো করে লিখে নিতে পারেন ।
বন্ধক নামার লিখার মূল কাঠামো কি কি?
শিরোনাম: বন্ধকী চুক্তির শুরুতে “বন্ধক নামা” বা “Mortgage Deed” উল্লেখ করতে হবে 
পক্ষগুলোর বিবরণ:
বন্ধকদাতা (Mortgagor): যিনি সম্পত্তি বন্ধক রাখছেন।
বন্ধকগ্রহীতা (Mortgagee): যিনি ঋণ দিচ্ছেন।
তাদের নাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন।বিবরণ:
সম্পত্তির বিবরণ (যেমন: জমি, ভবন, বা অন্য সম্পত্তি)।
ঋণের পরিমাণ।
বন্ধকের উদ্দেশ্য।
বন্ধকের শর্তাবলী।
শর্তাবলী:
ঋণ পরিশোধের সময়সীমা।
সুদের হার (যদি থাকে)।
বন্ধক রাখা সম্পত্তি ব্যবহারের অধিকার।
ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে বন্ধকগ্রহীতার অধিকার।
ঘোষণা ও নিশ্চয়তা:
বন্ধকদাতা ঘোষণা করবেন যে সম্পত্তিটি তার নিজের মালিকানাধীন এবং এর ওপর অন্য কোনো দাবি বা মামলা নেই।
আইনি ধারাসমূহ:
সংশ্লিষ্ট দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ধারাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করুন।
বন্ধক নামা নিবন্ধন করতে হবে কিনা তা উল্লেখ করুন।
সাক্ষীদের বিবরণ:
বন্ধক নামায় দুই বা ততোধিক সাক্ষীর স্বাক্ষর থাকতে হবে।
তাদের নাম, ঠিকানা এবং পরিচয়পত্রের বিবরণ।
স্বাক্ষর ও তারিখ:
বন্ধকদাতা এবং বন্ধকগ্রহীতার স্বাক্ষর।
সাক্ষীদের স্বাক্ষর।
বন্ধক নামা সম্পাদনের তারিখ।


এবার আসুন কিভাবে স্ট্যাম্পে/বন্ধক নামা দলিলে কি লেখা হয়- 
 একটি পরিপূর্ণ বন্ধক নামা দলিল নিম্নে তুলে হলো, 
                                                        
                                                            প্রথম পাতা

বন্ধক নামা দলিল

মৌজার নাম- রামপুরা
জমির পরিমাণ- ৩৩ (তেত্রিশ) শতাংশ
বন্ধকী মূল্য- ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা
বন্ধকীর মেয়াদ (যদি থাকে)-
উপজেলা-
জেলা-
 
 বরাবর/বন্ধক গ্রহিতা
নাম---- পিতা------- মাতা------- জন্ম তারিখ------ জাতীয় পরিচয় পত্র------ ধর্ম------ পেশা------ জাতীয়তা----- ঠিকানাঃ গ্রাম---         পোস্ট----  উপজেলা---- জেলা------ 


বন্ধক দাতার নাম- 
নাম---- পিতা------- মাতা------- জন্ম তারিখ------ জাতীয় পরিচয় পত্র------ ধর্ম------ পেশা------ জাতীয়তা----- ঠিকানাঃ গ্রাম---         পোস্ট----  উপজেলা---- জেলা------ 

         পরম করুণাময় মহান সৃষ্টিকর্তার নামে বন্ধক নামা দলিলের আইনানুগ বয়ান লেখা করিলাম ৷ জেলা- উপজেলা- এলাধীন মৌজা- রামপুরা  মধ্যে সাবেক/বি আর এস-       নং খতিয়ানে  সাবেক/বি আর এস-      নং দাগে  ৩৩ শতাংশ জমি আমি অত্র বন্ধক দাতা        নং দলিল মূলে/খরিদ সূত্রে/ পৈত্রিক ওয়ারিশ ৩৩ শতাংশ জমি প্রাপ্ত হইয়া ভোগবান মালিক ও দখলকার আছি, উক্ত ৩৩ শতাংশ জমি অত্র দলিলে বন্ধকী ভূমি বটে 
আমার সাংসারিক/ব্যবসায়িক প্রয়োজনে নগদ টাকার একান্ত দরকারে নিম্ন তফসিল বর্ণিত ৩৩ শতাংশ জমি আপনার নিকট বন্ধক রাখার প্রস্তাব করায় আপনি তাহা বন্ধক লইতে ইচ্ছুক হওয়ায় আপনি গ্রহীতার নিকট হইতে বন্ধকী মূল্য  ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা নিম্ন সাক্ষীগণের মোকাবিলায় আমার নিজ প্রবোধ মতো বুঝিয়া পাইয়া অঙ্গীকার বা স্বীকার করিতেছি যে, উল্লেখিত ৩৩ শতাংশ জমি আপনার নিকট বন্ধক বাবদ দখল ছাড়িয়া দিলাম 
 
প্রকাশ থাকে যে,উল্লেখিত ৩৩ শতাংশ জমি আপনার নিকট বন্ধক থাকা কালীন আমি অন্য কোথাও বিক্রয় বা হস্তান্তর করিতে পারিবনা, যদি করি আমি আইনত দণ্ডনীয় হইবো 
 
বন্ধকী ভূমিতে অর্জিত ফসল না থাকা কালীন আপনি গ্রহীতার দেওয়া বন্ধকী সাকুল্য টাকা ফেরত প্রদান করিলে বন্ধকী ভূমির সমস্ত দাবি দাওয়া ছাড়িয়া দিবেন, আর যদি বন্ধকী টাকা ফেরত প্রদানে কোনো প্রকার তাল বাহানা বা কোনো প্রকার ওজর আপত্তি করি তাহা হইলে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বন্ধকী টাকা ফেরত লইতে পারিবেন 
এই মর্মে আপন খুশিতে স্বেচ্ছায় অত্র বন্ধক নামা লিখিয়া দিলাম  
ইতি সন- ---------- তারিখ 
 
 
বন্ধক নামা কিভাবে লেখা হয়

বন্ধকী ভূমির তফসিল

 জেলা-          ,উপজেলা: ----, মৌজা- রামপুরা, জে, এল নং---- 

সাবেক/বি আর এস-            নং খতিয়ান ভূক্ত  
সাবেক/বি আর এস-           নং দাগ শ্রেণি কান্দা  অত্র দাগে বন্ধকী......................        ৩৩ শতাংশ জমি

মৌয়াজি তেত্রিশ শতাংশ জমি মাত্র 
 
বন্ধকী ভূমির চৌহদ্দি
উত্তরে:                                                         দক্ষিণে: 
পূর্বে :                                                         পশ্চিমে : 

অত্র বন্ধক নামা দলিল ০৩ (তিন ) স্ট্যাম্প দ্বারা লিখিত ০৩ জন সাক্ষী রহিল, দলিল পাঠ করিয়া মর্ম অবগত হইলাম 

মুসাবিদকারী / লেখকঃ 
                                                               

সাক্ষীগণের নাম ও ঠিকানা


(সমাপ্ত) 

 

ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown ১৯ এপ্রিল, ২০২২ এ ৯:৫৬ PM

    খুব সুন্দর হয়েছে

  • Md. Saiful islam
    Md. Saiful islam ২০ এপ্রিল, ২০২২ এ ৩:৫০ AM

    Good post

Add Comment
comment url