দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

 

 
জমা জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখকের মাধ্যমে দাতা ও দলিল গ্রহিতা কর্তৃক দলিল সম্পাদন পূর্বক দলিল খানা সাব-রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করে দলিল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়৷ 
 

দলিল রেজিস্ট্রির পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সমূহ হলো:- 

 
সিএস, এসএ, আর,এস, ও বিএস খতিয়ান ও নামজারি খতিয়ান এবং সেই এলাকার নতুন রেকর্ড জরিপ হয়ে থাকলে তার নতুন খতিয়ান৷ 
✔ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দলিলের মূল কপি বা ভায়া দলিলের সার্টিফাইড কপি যাকে দলিলের অনুলিপি বা নকল কপি বলা হয়৷ 

 ✔ বর্তমান হাল সনের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের খাজনার রশিদ যাকে দাখিলা বলা হয়৷ 
✔ দাতা ও গ্রহিতার জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধনের মূল কপি দেখিয়ে তার ফটোকপি প্রদান করতে হবে এবং দাতা ও গ্রহিতার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজ দুই কপি রঙ্গিন ছবি প্রদান করতে হবে৷ 
✔ পূর্ববর্তী ওয়ারিশ সূত্রে অর্থাৎ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করতে হবে৷ 
✔ জমির খতিয়ান ও দাগ অনুয়াযী জমির নকশা সংগ্রহ করতে হবে যা সেই এলাকার আমিন অথবা দলিল লেখকগণের সংগ্রহে থাকে৷ 

বর্তমানে জাতীয় পরিচয় পত্রে নামের বিভিন্ন ত্রুটি থাকায় একই ব্যক্তির বিভিন্ন জায়গায় একেক ধরনের নাম দেখা যায় সেক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান অথবা পৌর মেয়র কর্তৃক স্বাক্ষরিত নামের সংশোধনী প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করতে হবে৷ 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ পূর্বক সাব- রেজিস্ট্রারী অফিসে দলিল লেখকের মাধ্যমে দলিল লেখার পর তা ভালোভাবে ভুলত্রুটি গুলো যাচাই করে সংশোধন করার প্রয়োজন হলে তা সংশোধন করে দাতা ও গ্রহিতার টিপসহি/স্বাক্ষর দ্বারা সম্পাদন করে রেজিস্ট্রি অফিসারের নিকট দাখিল করে দলিল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে৷ 

দলিল রেজিষ্ট্রি হওয়ার পর, রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল খানা অফিস থেকে ডেলিভারি নেয়ার জন্য একটা রশিদ দেয়া হয়, রশিদ টি দলিলের ক্রেতা বা গ্রহিতা নিজের কাছে সংরক্ষণ করেন এবং ডেলিভারির সময়ে উক্ত রশিদটি অফিসে জমা দিয়ে মূল দলিল খানা অফিস থেকে গ্রহিতা তুলে নেন।
এক সময় দলিল রেজিষ্ট্রি হওয়ার কয়েকমাস পর মূল দলিল অফিস থেকে ফেরত পাওয়া যেত, কিন্তু বর্তমানে একটা দলিল রেজিষ্ট্রি হলে সে দলিল অফিস থেকে ফেরত পেতে কয়েকমাস না কয়েক বছর লেগে যায়। অফিস ভেদে ৪/৫ বছরও সময় লাগতে পারে। তার জন্য দলিল রেজিস্ট্রির সাথে সাথে দলিলের অনুলিপি বা নকল কপি নেয়া খুব ভালো যা দিয়ে নামজারি ও পরবর্তীতে বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যায়৷
অনেকেই এই দীর্ঘ সময় রশিদ খানা সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন না হয়তো হারিয়ে ফেলেন কিংবা ঠিক কোথায় রেখেছেন মনেই নেই।
অথচ মূল দলিল অফিস থেকে তুলতে হলে অবশ্যই মূল রশিদটি অফিসে জমা দিতে হবে নাহলে মূল দলিলটি দেয়া হবেনা।

রশিদ হারিয়ে গেছে আর মূল দলিলটি আপনার লাগবেই তো মূল দলিল পেতে আপনার কী করনীয় আছে?

আসুন জেনে নিই...

 
* যখনই জানতে পারলেন যে আপনার দলিলের রশিদ টি হারিয়ে গেছে, আপনি দলিলের রেজিষ্ট্রির তারিখ ও দলিল নম্বরটি সংগ্রহ করে, স্থানীয় থানায় দলিলের রশিদ হারিয়ে গেছে মর্মে জিডি করুন,(জিডিতে অবশ্যই দলিলের নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করবেন) এবং জিডির একটি কপি নিয়ে নিন।
 
* দলিলের দাতা এবং সনাক্তকারী সাক্ষীকে সাথে নিয়ে সংশ্লিষ্ট রেজিষ্ট্রি অফিসে যোগাযোগ করে দলিল টি পাওয়ার জন্য অফিসে আবেদন করুন,(দলিলের দাতা বা বিক্রেতা জীবিত না থাকলে দাতার মৃত্যু সনদ ওয়ারিশ সনদ এবং দাতার কোন ওয়ারিশ থাকলে তার আইডি কার্ড সহ তাকেও অফিসে নিবেন।)
দলিলের সার্টিফাইড কপি তোলা থাকলে বা রশিদটির ফটোকপি থাকলে সাথে নিবেন।
 
* আবেদনের প্রেক্ষিতে সাব রেজিষ্ট্রার সব কিছু যাচাই করে নিশ্চিত হওয়ার পর আপনাকে একখানা ডুপ্লিকেট রশিদ ইস্যু করে দেবে, আপনি সেটা দিয়ে দলিল তুলে নেবেন। (এ কাজের জন্য কিছু খরচ আছে)
দলিল ডেলিভারি পাওয়ার সময় না হলে ডুপ্লিকেট রশিদটি আপনার হেফাজতে রাখবেন এবং সময় মতো দলিলটি অফিস থেকে তুলে নিবেন।
 
* মূল দলিলটি তুলে নিতে না পারলেও সার্টিফাইড কপি তুলে সেটা দিয়ে রেকর্ড সংশোধন খাজনা দেয়া, প্লান পাস করা দান বিক্রয় হস্তান্তর কাজ করা যায়।
 
মূল কথা হলো- দলিল রেজিষ্ট্রি হওয়ার পর রশিদ টি আপনার নিজের কাছেই হেফাজতে রাখা ভালো হবে, এটা কোন দলিল লেখক বা তৃতীয় কোন ব্যক্তির হেফাজতে না রাখাই উত্তম।
সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে একখণ্ড জমি কিনলেন, তার দলিলের রশিদটি যত্নে রাখবেন, দুর্ঘটনা বশতঃ রশিদ টি হারিয়ে গেলে আর ভোগান্তির শেষ থাকেনা ।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

.

ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url