ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন ?

 

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন ?

ব্লগিং আসলে অনেকটা ডিজিটাল সংবাদপত্রের মত, এটি দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।

এখানে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করতে পারেন। এর মানে হল আপনি আপনার পছন্দের বিষয়ে কাজ করার সুযোগ পাবেন যা ইংরেজিতে Niche নামে পরিচিত।

ব্লগিং

যেহেতু আমরা এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভার্চুয়াল জগতের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল, ব্লগিং এই মুহূর্তে সত্যিই খুব দরকারী।

আমাদের আর খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস নেই, আমরা বিভিন্ন ব্লগিং সাইট ভিজিট করে সেই বিষয়ের বিভিন্ন খবর পেতে পারি। আপনার যদি টাইপিং করার দক্ষতা থাকে তাহলে দৈনন্দিন অন্যান্য কাজের পাশাপাশি অনলাইন জগতে ব্লগিং ক্যরিয়ার গড়ে আপনি আপনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অবসর সময়কে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে গড়ে তুলুন । 

এখন দেখা যাক কিভাবে আমরা এই ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারি।

ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনি গুগল অ্যাডসেন্স, অন্যান্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এ যোগ দিতে পারেন, যেখান থেকে আপনি যদি তাদের নীতিগুলি অনুসরণ করেন তবে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

তবে এটি যতটা সহজ মনে হয় ততটা নয়। এখানে আপনার প্রচুর মানসিক দৃঢ়তা, একাগ্রতা, শৃঙ্খলা, চাপ নেওয়ার ক্ষমতা দরকার।

দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এমন দিন আসবে যখন আপনি একটি দুর্দান্ত কাজ করেছেন কিন্তু কিছু কারণে আপনার ব্লগ সাইটটি কোনও ভিউ বা ক্লিক পায়নি। তাই সেই দিনটি আপনার জন্য ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়বেন না।

এমন দিন আসবে যখন আপনি কিছু লিখবেন না বা প্রকাশ করবেন না, তবুও আপনি আপনার অনেক পৃষ্ঠা দর্শন বা বিভিন্ন পাঠকদের কাছে বিজ্ঞাপনের জন্য প্রচুর অর্থ উপার্জন করবেন। 

তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় হয় টাকায় নয় ডলারে। এটা ভাবতে সত্যিই আশ্চর্যজনক, তাই না? কিন্তু এটা একেবারেই সত্য।

এর মধ্যে আরও অনেক প্রযুক্তিগত বিষয় রয়েছে যা আপনার ব্লগ পোস্টগুলিকে গুগলের প্রথম সারিতে নিয়ে যায়। এটাকে আসলে র‌্যাঙ্কিং বলা হয়।

আমি সত্যিই খুব আশাবাদী যে আগামী দিনে জনসংখ্যা বাড়বে এবং বেকারত্ব বাড়বে, তরুণ প্রজন্ম ব্লগিংয়ে তাদের ভাগ্য গড়ার চেষ্টা করবে।

ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রবৃদ্ধির হারে বলা যায় আগামী দিনে আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্লগ পড়ার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হব।

আপনি কেন ব্লগিং করতে চান? ব্লগিং করার কারণ কী?

আজকাল ব্লগিং একটি স্মার্ট পেশা। আপনি সহজেই আপনার দক্ষতা থেকে বিভিন্ন আর্টিকেল লিখে প্রকাশ করে আয় করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন যে আপনাকে প্রথমে মোটামুটি সময় দিতে হবে। তবেই আপনি সফল হতে পারবেন।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন ?

আজকাল ব্লগিং অনলাইনে আয় করার একটি জনপ্রিয় উপায়। কিন্তু আপনাকে জানতে হবে কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন। ব্লগ লেখার জন্য আপনার যে বিষয়ে দক্ষতা আছে এমন একটি বিষয় নির্বাচন করুন যেমন-

সংবাদ, কেনাকাটা, অনলাইন যোগাযোগ, ইন্টারনেট এবং টেলিকম, অটো এবং যানবাহন, অর্থনৈতিক, আইন ও সরকার, কম্পিউটার এবং ইলেকট্রনিক্স, খাদ্য ও পানীয়, খেলাধুলা, গৃহপালিত পশু এবং প্রাণী, খেলা, কর্মসংস্থান এবং শিক্ষা, বই এবং সাহিত্য, বাড়ি এবং বাগান, বিজ্ঞান, ব্যবসা এবং শিল্প, ভ্রমণ, আবাসন, রেফারেন্স, জনগণ ও সমাজ, শিল্প এবং বিনোদন, শখ এবং অবসর, সৌন্দর্য এবং ফিটনেস, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ।

আপনি উপরে উল্লিখিত যে কোন বিষয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। আরেকটি বিষয় হল ব্লগের আয় নির্ভর করে ব্লগের বিষয়ের উপর। 

ব্লগিংয়ের শুরুতে যা যা করা দরকার

আপনি যদি ব্লগিং শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে আগে ভাবতে হবে। গুগলের ফ্রি ব্লগার দিয়ে শুরু করবেন নাকি? ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুরু করছেন?

আপনি যদি ফ্রি ব্লগার দিয়ে শুরু করতে চান তাহলে কিভাবে শুরু করবেন। প্রথমে একটি Gmail খুলুন এবং তারপর এই Blogger.com সাইট থেকে Gmail এর সাথে লগইন করুন এবং আপনি YouTube-এ অনেক ভিডিও টিউটোরিয়াল পাবেন যেখান থেকে আপনি একটি বিনামূল্যে ব্লগার সাইট সেট আপ করতে পারবেন কিভাবে খুব সহজেই একটি ব্লগ তৈরি করবেন ।

আর আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে একটি ডোমেইন কিনতে হবে। ডোমেইন কি? একটি ডোমেইন হল একটি ওয়েবসাইটের নাম বা আপনার ব্লগ সাইটের নাম যা আপনাকে ক্রয় করতে হবে। তারপর আপনাকে ডোমেইন সহ হোস্টিং কিনতে হবে। হোস্টিং কি? হোস্টিং হল এক ধরনের অনলাইন সার্ভার মেমরি যা আপনার ব্লগ সাইটের বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করবে এবং কেউ যদি আপনার ব্লগ সাইট ভিজিট করে তাহলে সেই হোস্টিং থেকে পাঠানো হবে। তারপরে আপনি ডোমেইন হোস্টিং যোগ করতে পারেন এবং ইউটিউব ভিডিও দেখে বা ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারে এমন কাউকে কিছু অর্থ প্রদান করে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি সাইট তৈরি করতে পারেন।

তারপর আপনি সেখানে মানসম্পন্ন আর্টিকেল লিখে ব্লগিং শুরু করতে পারেন। কি লিখতে হবে আপনি যে বিষয়ে ভালো লেখার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা আছে সে বিষয়ে লিখুন।

কোন বিষয়ের উপর ব্লগিং করলে ভালো ট্রাফিক ও ভিজিটর পাওয়া যাবে?

কেউ সব বিষয়ে ভালো হতে পারে না। আপনার কেবল সেই বিষয়ে ব্লগ করা উচিত যেটাতে আপনার ভালো দক্ষতা আছে যা আপনি ভালো জানেন । তাহলে অনেক দূর যেতে পারবেন।

কিন্তু যেহেতু ট্রাফিক বা ভিজিটরদের কথা বলা হচ্ছে তাহলে আমি ধরে নিচ্ছি আপনি সব বিষয়েই খুব ভালো লিখতে পারবেন। এখন আপনার বিষয় নির্বাচন করার সময় একবার আপনি একটি ভাল বিষয় খুঁজে, আপনি লিখতে শুরু করুন ।

ট্র্যাফিকের উপর ভিত্তি করে ব্লগিং শুরু করা হলে কিছু সময়ের জন্য ভাল ট্র্যাফিক পাওয়া যাবে ঠিক আছে তবে দীর্ঘমেয়াদে এর কোনও ভবিষ্যত নেই। তাই আমি বলব শুধু ট্রাফিকের উপর নির্ভর না করে ব্লগিং করুন আপনি কোন বিষয়ে ভালো আছেন ৷ তাহলে আপনার লেখা আর্টিকেল গুলো হবে অনন্য এবং সার্চ ইঞ্জিনের র‌্যাঙ্কিং সহজ হবে।

উপরোক্ত কথাটি ভুল বুঝবেন না - আমি এটা শুধু বোঝার জন্য বলেছি যে আপনি ব্লগিংয়ে নতুন, কারণ ব্লগিংয়ে আপনার অবস্থান সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।

এখন মূল কথায় আসি, কোন বিষয়গুলো ভালো ট্রাফিক পায়।

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় তথ্য প্রযুক্তি। আপনি এই সেক্টরে প্রচুর ভিজিটর পাবেন। কিন্তু সেই পরিমাণ দর্শকের তুলনায় আপনি বিজ্ঞাপনে ক্লিক কম পাবেন। কারণ আইটি সেক্টরের দর্শকরা অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় কম বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন।

দ্বিতীয় বিষয়ের কথা বলতে গেলে, সাম্প্রতিক সংবাদ সম্পর্কে আমরা ব্লগ বা ওয়েবসাইট বলতে পারি। গুগল তার নতুন অ্যালগরিদমে এই ধরনের ওয়েবসাইটগুলোকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তৃতীয় বিষয় স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস। এই সেক্টরে আপনি ভিজিটরদের মতো বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতে পারেন।

চতুর্থত, বাগান এবং বৃক্ষরোপণ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রচুর সংখ্যক দর্শনার্থী দেখেছে। তাই বাগান বা বৃক্ষরোপণ নিয়ে ব্লগিং করলে ভালো পরিমাণে ট্রাফিক তৈরি হয়।

পঞ্চম জিনিসটি সম্পূর্ণ আপেক্ষিক, এক্ষেত্রে আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। কীওয়ার্ডে ব্লগিং করলে আপনি সবচেয়ে বেশি মাসিক ট্রাফিক পাবেন। 

ব্লগে ট্রাফিক নিয়ে আসতে কি করতে হবে? ব্লগে ট্রাফিক বাড়ানোর উপায়
ব্লগে ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য আপনাকে প্রথমে ইউনিক কনটেন্ট নিজে লিখতে হবে এবং ইউনিক কনটেন্ট লেখার পর আপনাকে সুন্দর করে সাজাতে হবে। এর জন্য, আপনার লেখার গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলিকে বোল্ড করা উচিত, তারপর লেখাটি ভালভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য ছবি ব্যবহার করুন। 
এবং নিম্নোক্ত বিষয়গুলি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে- 

👉 পোস্টের জন্য ভাল কীওয়ার্ড রিসার্চ করুন।
👉 আর্টিকেল লেখায় কনটেন্ট বিষয়বস্তুর উপর জোর দিতে হবে।
👉 কনটেন্ট লেখার সময় SEO ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট লিখুন।
👉 আর্টিকেল পোস্ট করার সময় ট্যাগ, লেভেল, পারমালিঙ্ক ঠিকভাবে লিখে দিতে হবে।
👉 পোস্ট করার পর সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা পোস্ট ইনডেক্স করা করতে হবে।
👉 এবং অবশেষে আপনাকে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্টটি শেয়ার করতে হবে।

এইভাবে আপনি আপনার ব্লগারে ট্রাফিক আনতে বা বাড়াতে পারেন।



ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url