দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্র একান্তই আবশ্যকীয় হয়ে পড়ে ৷ প্রত্যয়নের প্রকৃত অর্থ হলো সত্যায়ন ৷ মূলক প্রত্যয়ন একটি দলিল স্বরুপ কাজ করে থাকে, যা একজন ব্যক্তির কর্মজীবন, ব্যক্তি জীবন ও পারিপার্শিক বিষয় নিয়ে তার প্রকৃত পরিচয় বহন করে৷
প্রত্যয়ন কি ?
একজন ব্যক্তির পরিচয়কে নির্ভুলভাবে প্রকাশ করার জন্য অথবা তার ব্যক্তি পরিচয় নিশ্চত করার জন্য প্রত্যয়ন পত্র লেখা ও সত্যায়িত করা হয়ে থাকে৷
প্রত্যয়ন পত্র বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্নভাবে সত্যায়িত হয়ে থাকে, সরকারী গ্যাজেটেট অফিসার দ্বারা সত্যায়িত হয়ে থাকে, সিটি মেয়র, পৌর মেয়র আবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার দ্বারাও সত্যায়িত করা যায়৷
প্রত্যয়ন পত্র কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়
👉 শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
👉 জমি জমা ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে
👉 ব্যাবসায়িক ক্ষেত্রে
👉 চাকুরী ক্ষেত্রে
👉 বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে
ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যয়ন পত্র কাজে লাগে
একই ব্যাক্তির দুই নামের প্রত্যয়ন কিভাবে লিখা হয়
বর্তমানে দেখা যায় একজন ব্যাক্তির প্রকৃত নাম এবং তার জাতীয় পরিচয় পত্রে ভিন্ন নাম দেখা যায় এমন কি জমি জমার কাগজপত্রাদির ক্ষেত্রেও আলাদা নাম লক্ষ্য করা যায়
উদাহরণ স্বরূপ- জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যদি একই ব্যক্তির দুইটি নাম পাওয়া যায় তাহলে নিম্ন বর্ণিতভাবে সমাধান করতে পারবেন
আপনি যদি ইউনিয়ন এলাকার নাগরিক হয়ে থাকেন । তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের নাম একটি প্রত্যয়ন লিখে নিয়ে আপনার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বার দ্বারা প্রত্যয়ন পত্রটি সত্যায়িত করে নিয়ে কাজ সমাধান করবেন-
৮নং ফুলতলি সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়
উপজেলা: মাদারগঞ্জ, জেলা: জামালপুর ।
প্রত্যয়ন পত্র
এই মর্মে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা যাইতেছে যে, মোসা: হাজরা খাতুন ওরফে হাজেরা বেগম, স্বামী: মৃত মান্নান মিয়া, গ্রাম: ভুরুলিয়া, পো: ফুলতলি, ইউনিয়ন: ফুলতলি, ওয়ার্ড নং- ০১, উপজেলা: মাদারগঞ্জ, জেলা: জামালপুর । উপরোক্ত মোসা: হাজরা খাতুন ওরফে হাজেরা বেগম তিনি একই ব্যক্তি দুই নামেই পরিচিতি আছে ৷ প্রকৃতপক্ষে তিনি একই ব্যক্তি ৷ সে ফুলতলি সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের একজন স্থায়ী বাসিন্দা ৷ তাহাকে আমি চিনি ও জানি ৷
**আমি তাহার জীবনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি**
উপরোক্ত প্রত্যয়নপত্র টি সত্যায়িত করার মাধ্যমেই তিনি একক ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত হবেন ৷
মৃত ব্যক্তির নামে প্রত্যয়ন কিভাবে লিখবেন
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেকোনো কাজে উদাহরণ স্বরুপ, আপনি যদি পিতার নামীয় জমি বিক্রয় করতে চান পিতার নাম পর্চায় বা দলিলে এক রকম এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে আপনার পিতার নাম আরেক রকম তাহলে এক্ষেত্রে আপনার করণীয় হলো নিম্ন বর্ণিতভাবে একটি প্রত্যয়ন লিখে সত্যায়িত করা হোক সেটা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, বা সিটি কর্পোরেশন সত্যায়িত করা হলেই কাজ হবে ৷
মেলান্দহ পৌরসভা কার্যালয়
উপজেলা: মেলান্দহ, জেলা: জামালপুর ।
প্রত্যয়ন পত্র
এই মর্মে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করা যাইতেছে যে, মৃত ছৈয়দ আলী ওরফে ছায়েদ আলী, পিতা: মৃত রহমত আলী, গ্রাম: মালঞ্চ, পো: মালঞ্চ, পৌরসভা: মেলান্দহ, ওয়ার্ড নং- ০১, উপজেলা: মেলান্দহ, জেলা: জামালপুর । উপরোক্ত মৃত ছৈয়দ আলী ওরফে ছায়েদ আলী তিনি একই ব্যক্তি দুই নামেই পরিচিতি ছিলেন ৷ প্রকৃতপক্ষে তিনি একই ব্যক্তি ৷ সে মেলান্দহ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের একজন স্থায়ী ছিলেন ৷ তাহাকে আমি চিনতাম ও জানি ৷
**আমি তাহার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি**
উপরোক্ত প্রত্যয়নপত্র টি সত্যায়িত করার মাধ্যমেই তিনি একক ব্যক্তি হিসেবে পরিগণিত হবেন ৷
প্রত্যয়ন কেন লেখা হয়?
ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার আর ব্যক্তির সত্যতা উৎপাদন করা এক কথা নয়। ‘প্রত্যয়ন’ ও ‘প্রত্যায়ন’ শব্দের অর্থ আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, কোনো ব্যক্তির পরিচয়কে নির্ভুলভাবে প্রতিপাদন করার জন্য কিংবা কোনো ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য প্রত্যয়ন লেখা যৌক্তিক।
‘প্রত্যয়ন’ শব্দটিতে ‘নির্ভুলভাবে প্রতিপাদন করা হয়েছে’ কথাটি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির পরিচয়কে নিভুল করার জন্য যে পত্র দেওয়া হয় সেটিতে প্রত্যয়ন লেখা সমীচীন।
‘প্রত্যয়ন’ পাওয়ার পর ‘প্রত্যায়ন’। যেহেতু প্রত্যয়ন দ্বারা ব্যক্তির পরিচয়কে নিশ্চিত করার অর্থটি প্রধানরূপে প্রতিভাত হচ্ছে, সেহেতু এক্ষেত্রে ‘প্রত্যায়ন’ শব্দের চেয়ে ‘প্রত্যয়ন’ শব্দ ব্যবহার সমধিক যৌক্তিক।