পৈতৃক সম্পত্তিতে ভারতীয় হিন্দু মেয়েদের অধিকার
পৈতৃক সম্পত্তিতে ভারতীয় হিন্দু মেয়েদের অধিকার |
পৈতৃক সম্পত্তিতে হিন্দু নারীদের অধিকার আদায়ে ভারতীয় নারীদের পক্ষে বড় রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ এবার থেকে বাবার সম্পত্তিতে মেয়েদেরও পৈতৃক অধিকার থাকবে ৷ ২০০৫ সালে এই নিয়ম তৈরি করা হয়েছিল যে ছেলে ও মেয়ের দু’জনের বাবার সম্পত্তিতে সমান অধিকার থাকবে ৷
ভারতীয় হিন্দু মেয়েদের অধিকার
২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন ১৯৫৬-এ সংশোধন করা হয়েছিল ৷ এখানে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমান অধিকার বিষয়ে বলা হয়েছিল ৷ Legal heir হওয়ার কারণে সম্পত্তিতে ছেলেদের যতটা অধিকার মেয়েদেরও ঠিক ততটাই অধিকার ৷ বিয়ের সঙ্গে এর কোনও যোগসূত্র নেই ৷ বিয়ে হয়ে গেলেও মেয়েরা তাদের সম্পত্তির উপর দাবি করতে পারে ৷
হিন্দু আইন অনুযায়ী, সম্পত্তি দু’ধরনের হয়ে থাকে ৷ একটি যেটা বাবা কিনেছেন ৷ আর দ্বিতীয় যেটি পৈতৃক সম্পত্তি, যা গত চার পুরুষ পেয়ে এসেছে ৷ আইন অনুযায়ী, মেয়ে হোক বা ছেলে এই সম্পত্তিতে জন্ম থেকে দু’জনের সমান অধিকার রয়েছে ৷ অর্থাৎ কেবল একজনের নামে উইল করতে পারবেন না ৷ এবার কোনও ভাবেই মেয়েদেরকে তাদের সম্পত্তির ভাগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না ৷ জন্ম থেকে পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদেরও সমান অধিকার রয়েছে ৷
পিতার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে মেয়েদের অধিকার আছে কি?
পিতা যদি নিজে কোন সম্পত্তি কিনে থাকেন তাহলে তিনি সেটা নিজের ইচ্ছেয় যে কারোর নামে গিফ্ট করতে পারেন ৷ সে ক্ষেত্রে মেয়েরা আপত্তি জানাতে পারবেন না ৷
কিন্তু যদি পিতার মৃত্যু হয়ে যায় এবং তিনি উইল না করে যান তাহলে সেক্ষেত্রে উত্তরাধিকাররা সবাই সমান ভাগ পাবেন ৷
মেয়ের জন্ম ৯ সেপ্টেম্বর ২০০৫ এর আগে বা পড়ে হলেও বাবার সম্পত্তিতে ছেলের সমান ভাগ পাবেন ৷ ২০০৫-এর সংশোধনীর আগে মা-বাবার মৃত্যু হলেও মেয়েরা সমান অধিকারী সম্পত্তির ৷ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে ২০০৫ সালে সংশোধন করা হয়৷ সংশোধনীতে বলা হয়, মা-বাবার সম্পত্তিতে মেয়েদের সমান অধিকার থাকবে৷ এ দিন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, আইনে ওই সংশোধনী লাগু হওয়ার আগেও মা-বাবা যদি মারা যান, তাতেও পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমান অধিকার রয়েছে
হিন্দু উত্তরাধিকার সংশোধনী আইন 2005 এর অধীনে বিবাহিত কন্যাদের সম্পত্তির অধিকার
বিয়ের পরে, একটি কন্যা তার পিতামাতার HUF-এর সদস্য হওয়া বন্ধ করে দেবে, কিন্তু সমকামী হতে থাকবে। এইভাবে, তিনি HUF সম্পত্তি ভাগ করার অধিকারী, সেইসাথে HUF এর মালিক হওয়ার অধিকার, যদি তিনি তার পিতার HUF-এর জ্যেষ্ঠ স্ত্রী হন। এমনকি বিবাহিত কন্যা মারা গেলেও, তার সন্তানরা দেশভাগের তারিখে বেঁচে থাকলে তারা যে অংশ পেতেন তার প্রাপ্য হবে। দেশভাগের তারিখে যদি তার কোনো সন্তান বেঁচে না থাকে, তাহলে নাতি-নাতনিরা সেই অংশ পাবে, যা দেশভাগের সময় মেয়ে পেতেন। মজার বিষয় হল, কন্যা জীবিত থাকাকালীন HUF সম্পত্তিতে তার অংশ উপহার দিতে পারে না তবে সে তার ইচ্ছার মাধ্যমে HUF সম্পত্তিতে তার অংশ উপহার দিতে সম্পূর্ণ সক্ষম। উইল প্রস্তুত না হলে, তার মৃত্যুর পর, যৌথ সম্পত্তিতে তার অংশ এইচইউএফ-এর অন্যান্য সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হবে না কিন্তু তার আইনি উত্তরাধিকারীদের কাছে চলে যাবে।