কিভাবে দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রোভ হবে/How to Get AdSense Approved Fast
ব্লগিং করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে হলে প্রথমেই আমাদের ওয়েবসাইটটিকে গুগল অ্যাডসেন্সের অনুমোদন পেতে হবে। তার জন্য সবার আগে জানতে হবে কিভাবে গুগল অ্যাডসেন্স পেতে হয়। তা নাহলে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও গুগল অ্যাডসেন্স অনুমোদিত হবে না।
আপনি যদি আপনার নিজের ব্লগ ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই নিম্নলিখিত পয়েন্টগুলিতে মনোযোগ দিতে হবে।
অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে করণীয়
নতুন যারা ব্লগিং থেকে ওয়েবসাইট আয় করতে চান তাদের বেশিরভাগই কিছু না বুঝেই কয়েকটি ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করেন। ফলে বারবার আবেদন করার পরও অ্যাডসেন্স অনুমোদিত হয় না। এবং কখনও কখনও তারা হতাশ হয়। এডসেন্স এপ্লাই করার আগে কিভাবে সহজে গুগল এডসেন্স পাওয়া যায় তার টিপস অনুসরণ করে আবেদন করলে আপনি সহজেই গুগল এডসেন্স পেয়ে যাবেন।
গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে যা করতে হবে তার বিস্তারিত আলোচনা নিচে দেওয়া হল:
ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং কাস্টমাইজেশন
গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পেজ তৈরি করতে হবে। আপনি যদি এই পেজ গুলি তৈরি না করে গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায় খুঁজেন তবে আপনার আবেদন কোন কাজে আসবেনা । গুরুত্বপূর্ণ পেজ গুলি About Us, Contact Us, Privacy Policy, Terms & Conditions, Disclaimer ইত্যাদি ।
এই গুলি খুব সহজেই গুগল থেকে তৈরি করে নিতে পারেন । যেমন গুগলে আপনি সার্চ করতে পারেন About Us Generator লিখে। গুগল এডসেন্স পাবার জন্য বাধ্যতামূলক আপনাকে এই পেজগুলি তৈরি করতে হবে। এর পর ওয়েবসাইট এমনভাবে খুব সাধারণ ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজাইন করতে হবে যাতে দেখতে আকর্ষণীয় আর পেজ স্পিড ভালো থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এডসেন্স পাওয়ার জন্য যদিও ওয়েবসাইট এর ডিজাইন কোন বিষয় না তবে সাধারণ ডিজাইন ভিজিটরদের আকৃষ্ট করে ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখতে পারে এতে বাউন্স রেট কম থাকে ।
প্রিমিয়াম ডোমেইন ব্যবহার
ডোমেইন একটা ওয়েবসাইটের ঠিকানা প্রকাশ করে। তাই এটা ছোট বা বড় হোক আপনার ব্লগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স অনুমোদন পেতে ডোমেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার দ্রুততম উপায় হল প্রিমিয়াম ডোমেইন ব্যবহার করা। আপনার অনলাইন ব্লগের জন্য .com, .xyz, .net, org, .tech .in ইত্যাদি ডোমেইন নাম ব্যবহার করার চেষ্টা করা প্রয়োজন। কারণ গুগল এই নামের ডোমেইনকে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। কাস্টম ডোমেইন হল গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়।
ফ্রি ডোমেইন ব্যবহার এডসেন্স পাওয়া যাবে কিনা?
আপনার লেখা কন্টেন্ট যদি ভালো হয় এবং বেশি ভিজিটর পাওয়া যায়, তাহলেও ব্লগস্পট সাব-ডোমেইন Google Adsense দ্বারা অনুমোদিত হবে। কিন্তু যেহেতু আপনি এখান থেকে আয় করবেন। তাহলে অবশ্যই আপনার ব্লগের একটি অনন্য নাম থাকা উচিত। যাতে আপনার ভিজিটররা এটি সহজেই খুঁজে পেতে পারেন।
কপিরাইট মুক্ত আর্টিকেল পাবলিশ করা
ওয়েবসাইটগুলিতে অ্যাডসেন্সের আবেদন বাতিলের অন্যতম বড় কারণ হল কপিরাইটযুক্ত কন্টেন ব্যবহার করা। অনেক নতুন ব্লগার আছেন যারা অজান্তেই অন্য ওয়েবসাইট থেকে কন্টেন্ট কপি করে হুবহু পাবলিশ করেন এবং তাদের ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করেন।
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাডসেন্সের জন্য তার আবেদন রিজেক্ট করলে তিনি হতাশ হন তাই মনে রাখবেন যে, গুগল থেকে কোন ছবি ডাউনলোড করে এটি সরাসরি আপনার আর্টিকেলে ব্যবহার করবেন না। যদি ব্যবহার করতে চান তাহলে কিছুটা কাস্টমাইজ করে ব্যবহার করতে পারেন, কপিরাইটযুক্ত ছবি ব্যবহার করা গুগল অ্যাডসেন্স এবং গুগল সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের দ্বারাই নিষিদ্ধ।
Pixabay.com, pexels.com ও unsplash.com সহ আরও অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে কপিরাইট ফ্রী ছবি, ভিডিও পাবেন৷ আপনাকে শুধু গুগলে "কপিরাইট ফ্রী ছবি" অনুসন্ধান করতে হবে। তাই একজন ব্লগার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই আর্টিকেল লেখার অভ্যাস করতে হবে। অন্য কারো লেখা কপি করা আপনাকে বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। তাই কপিরাইট মুক্ত কন্টেন্ট ব্যবহার করা হল গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায়।
পেইড থিম ব্যবহার করা
ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটটি ইউজার ফ্রেন্ডলি উপায়ে Google Adsense সক্রিয় করতে হবে। এজন্য আপনার ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি ফ্রি বা পেইড থিম ব্যবহার করতে হবে এবং সেখানে আপনি আপনার নিশ অনুযায়ী ডিজাইন করবেন।
এই থিম কাস্টমাইজেশন করা বেশ সহজ কাজ। এটি করার জন্য আপনাকে HTML, CSS বা JavaScript জানতে হবে না। অ্যাডসেন্সে আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই একটি ব্যবহারকারী বান্ধব এবং সহজ থিম আপলোড বা ইনস্টল করতে হবে। এটা মাথায় রাখলে অ্যাডসেন্স পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং যখন থিমের কথা আসে, আপনি যদি একটি প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করেন তবে এটি আরও ভাল।
তার পর :- আপনার ওয়েবসাইট গুগল সার্চ কনসোল যোগ করতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া আইকন ব্যবহার করতে হবে নিয়মিত ওয়েবসাইট আপডেট ও কন্টেন্ট পাবলিশ করতে হবে বিষয়বস্তু নীতি অনুযায়ী পোস্টিং
কতটি পোস্ট পাবলিশ করতে হবে
অ্যাডসেন্স অনুমোদন পাবার ক্ষেত্রে, AdSense এর কোন বাধ্যতামূলক নিয়ম নেই। যদি আপনার বিষয়বস্তু অনন্য এবং তথ্যপূর্ণ হয় তাহলে আপনি অবশ্যই অ্যাডসেন্স পাবেন। আমি অনেক লোককে দেখেছি যারা ৮ থেকে ১২ টি আর্টিকেল লিখে এবং অ্যাডসেন্স অনুমোদন পেয়েছেন। তবে আমার মতে অন্তত বিশটির মতো ইউনিক আর্টিকেল লেখার পর অ্যাডসেন্সে আবেদন করাই ভালো।
কত ওয়ার্ডের আর্টিকেল লিখতে হবে
এক্ষেত্রে গুগল কিছু উল্লেখ করেনি। কিন্তু আপনি যখন একটি তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল লিখবেন তখন তা অবশ্যই একটি বড় এবং মানসম্পন্ন লেখা হতে হবে। এবং তথ্যপূর্ণ বিষয়বস্তু Google সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়। তাই একটি সাধারণ নিয়ম হিসাবে, সর্বদা ৫০০ শব্দের বেশি লেখার চেষ্টা করুন। আর্টিকেল এর মান বজায় রাখুন। অনেকে ২০০ থেকে ৫০০ শব্দের আর্টিকেল লিখে অ্যাডসেন্স পান।
গুগল এডসেন্স কি বাংলা ব্লগ সাপোর্ট করে
যারা নতুন অবস্থায় ব্লগিং শুরু করতে চান, তাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, বাংলা লিখে কি অ্যাডসেন্স পাওয়া সম্ভব? উত্তর হল হ্যাঁ আপনি অবশ্যই পাবেন । আমার ব্লগ সহ ইন্টারনেটে অনেক বাংলা ওয়েবসাইট আছে যেগুলো গুগল অ্যাডসেন্স অনুমোদিত। আপনি চাইলে আরো গবেষণা করতে পারেন। তাই আশা করি গুগল অ্যাডসেন্স বাংলা ব্লগ সাপোর্ট করে নাকি এই উত্তরটা আরেকটু ক্লিয়ার হতে পারে।
ভিজিটরের সাথে সংযুক্ত হবার মাধ্যম
যখন কোন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এবং সে যদি আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চায় বা আপনাকে জানাতে চায়, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট পেজের মাধ্যমে জানাতে হবে। অনেকেই আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাইবেন। আর কিছু পেজ আছে যেগুলো ছাড়া আপনি কখনই AdSense পাবেন না । সেই পেজ গুলি উপরে আগেই উল্লেখ করেছি তা হলো- About Us, Contact Us, Privacy Policy, Terms & Conditions, Disclaimer ইত্যাদি ।
উপরে গুগল অ্যাডসেন্স অনুমোদিত না হওয়ার অনেক কারণ নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ছাড়া অ্যাডসেন্স অনুমোদন না পাওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। নীচে আরো কিছু সংক্ষিপ্ত কারণ বলা হলো Google AdSense অনুমোদন না হবার।
➡AdSense আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর না হলে।
➡ ব্লগ যদি খারাপ সাইটের সাথে লিঙ্ক করা হয়।
➡ সাইট ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হলে।
➡ ১৮+ কোনো পোস্ট থাকলে
➡ ব্লগের বিষয়বস্তুর ভাষা সমর্থিত না হলে।
➡ আগে যদি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট ব্যান করা হয়ে থাকে ।
➡ আপনি যদি সঠিকভাবে অ্যাডসেন্স নীতি অনুসরণ না করেন।