মুসলিম উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর -2023

প্রতিটি মানুষের জানা উচিত কিভাবে একজন মানুষ উত্তরাধীকারি সূত্রে তার হিস্যায়/ অংশে কতটুকু সম্পত্তি পাবে- দুনিয়াতে বাঁচতে হলে যেমন খাদ্যের পাশাপাশি অন্যান্য মৌলিক চাহিদার প্রয়োজন অপরিহার্য ঠিক তেমনি আপনার সম্পত্তির সঠিক হক বুঝে নেয়া বা বুঝে দেওয়াও কর্তব্য ৷ 

সম্পত্তি নিয়ে মানুষের মাঝে ভুল বুঝা বুঝির কারণে প্রতিনিয়ত অঘটন ঘটেই চলছে, এমন কোন জায়গা বা পরিবার নেই যেখানে জমি জমা বা সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ নেই ৷ 
মুসলিম উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর

মুসলিম ফারায়েজ বা উত্তরাধিকার আইন অনুসারে উত্তরাধিকার তিন শ্রেণীর 

(১) নিকট আত্মীয় অংশীদার (২) অবশিষ্ট সুবিধাভোগী  এবং (৩) দূরবর্তী আত্মীয় 
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের অধীনে নিম্নলিখিত ছয় ব্যক্তি কোনো অবস্থাতেই উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হয় না- (১) বাবা (২)  মা (৩) পুত্র (৪) কন্যা (৫) স্বামী (৬) স্ত্রী 

যেহেতু আপনি এই লেখাটি পড়তে আসছেন তার মানে আপনি নিশ্চয়ই একজন উত্তরাধীকারি হিসাবে সঠিক হিসাবটি বুঝে পেতে চান, কিভাবে উত্তরাধীকারি সম্পত্তি বন্টন করতে হয় এই হিসাবটি আপনার জানা থাকলে কেউ আপনাকে ঠকাতে পারবেনা এবং আপনি নিজেই তখন অন্যদের সম্পদের সঠিক অংশ বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হবেন ৷ এই লেখার মাধ্যমে খুব সহজেই আলোচনা করবো- 

কিভাবে উত্তরাধীকারি সম্পত্তি বন্টন করবেন

যেমন ধরুন, একটি খতিয়ানে মোট ৫টি দাগ আছে, যথাক্রমে-

৭৩১৪ নং দাগে--- ৩৪ শতাংশ জমি
৭৩১৫ নং দাগে--- ২৬ শতাংশ জমি
৭৩১৭ নং দাগে--- ২৭ শতাংশ জমি
৭৩১৮ নং দাগে--- ১৫ শতাংশ জমি
৭৩১৯ নং দাগে--- ১৮ শতাংশ জমি
৫টি দাগে--------  মোট= ১২০ শতাংশ জমি

এখন খতিয়ানের মালিক হলেন তিনজন যথাক্রমে- (১) আকবর আলী (২) সাগর আলী, (৩) রফিক আলী,  

প্রত্যেকের হিস্যায় জমি বের করার নিয়ম

একটি খতিয়ানে সর্ব দাগের মোট জমির পরিমান থেকে অংশ বের করার পদ্ধতি হলো মোট জমির সাথে প্রাপ্ত ব্যক্তির হিস্যা গুণ করতে হবে যা নিম্নে দেখানো হলো :-  

আকবর আলী নামে .৩৫০ হিস্যায়= ৪২ শতাংশ জমি
সাগর আলী নামে .৪২০ হিস্যায়=৫০.৪০ শতাংশ জমি
রফিক আলী নামে.২৩০ হিস্যায়= ২৭.৬০ শতাংশ জমি

উপরে পাঁচটি দাগে মোট ১২০ শতাংশ জমি হইতে প্রত্যকের হিস্যা অনুপাতে জমির পরিমান বের করা হলো 

প্রতি দাগে হিস্যায় জমি বের করার নিয়ম

মোট জমি থেকে যেভাবে জমির পরিমাণ বের তেমনি আলাদা আলাদা দাগ থেকেও একইভাবে দাগের জমি পরিমাণ এর সাথে হিস্যা দিয়ে গুণ করলেই হবে নিম্নে তা দেখানো হলো- 

আকবর আলী নামে .৩৫০ হিস্যায়
দাগ নং দাগের জমি প্রাপ্ত হিস্যায় জমি
৭৩১৪ ৩৪ শতাংশ জমি ১১.৯০ শতাংশ জমি
৭৩১৫ ২৬ শতাংশ জমি ০৯.১০ শতাংশ জমি
৭৩১৭ ২৭ শতাংশ জমি ০৯.৪৫ শতাংশ জমি
৭৩১৮ ১৫ শতাংশ জমি ০৫.২৫ শতাংশ জমি
৭৩১৯  ১৮ শতাংশ জমি ০৬.৩০ শতাংশ জমি
পাঁচটি দাগে আকবর আলীর মোট ৪২ শতাংশ জমি 

  সাগর আলী নামে .৪২০ হিস্যায়
দাগ নং দাগের জমি প্রাপ্ত হিস্যায় জমি
৭৩১৪ ৩৪ শতাংশ জমি ১৪.২৮ শতাংশ জমি
৭৩১৫ ২৬ শতাংশ জমি ১০.৯২ শতাংশ জমি
৭৩১৭ ২৭ শতাংশ জমি ১১.৩৪ শতাংশ জমি
৭৩১৮ ১৫ শতাংশ জমি ০৬.৩০ শতাংশ জমি
৭৩১৯  ১৮ শতাংশ জমি ০৭.৫৬ শতাংশ জমি
পাঁচটি দাগে সাগর আলীর মোট ৫০.৪০ শতাংশ জমি

  রফিক আলী নামে .২৩০ হিস্যায়
দাগ নং দাগের জমি প্রাপ্ত হিস্যায় জমি
৭৩১৪ ৩৪ শতাংশ জমি ০৭.৮২ শতাংশ জমি
৭৩১৫ ২৬ শতাংশ জমি ০৫.৯৮ শতাংশ জমি
৭৩১৭ ২৭ শতাংশ জমি ০৬.২১ শতাংশ জমি
৭৩১৮ ১৫ শতাংশ জমি ০৩.৪৫ শতাংশ জমি
৭৩১৯  ১৮ শতাংশ জমি ০৪.১৪ শতাংশ জমি
পাঁচটি দাগে রফিক আলীর মোট ২৭.৬০ শতাংশ জমি ৷

এবার আসুন

মৃত ব্যক্তির পরবর্তী ওয়ারিশদের মাঝে কিভাবে সম্পত্তি বন্টন করা হয়

যেমন ধরুন, আকবর আলী তার অংশের ৪২ শতাংশ জমি রাখিয়া মৃত্যুবরন করলে তার পরবর্তী ওয়ারিশ ১ স্ত্রী, ৪ পুত্র ও ২ কন্যা আছে ৷ এখন উক্ত ওয়ারিশদের হিস্যায় জমি বন্টন করবো প্রথমে স্ত্রী ১/৮ অংশ অর্থাৎ .১২৫ হিস্যায় জমি পাবার পর অবশিষ্ঠ সম্পত্তি পুত্র ও কন্যাগণ পাবে যা এক বোনের দ্বিগুন অর্থাৎ এক ভাই যা পাবে তার অর্ধেক পাবে এক বোন, 

  উপরে উল্লেখিত খতিয়ান হতে মৃত আকবর আলী অংশে ৪২ শতাংশ জমির বন্টন

সম্পর্ক প্রাপ্য হিস্যা প্রাপ্ত জমি
স্ত্রী- রমেছা বেগম .১২৫ হিস্যা ০৫.২৫ শতাংশ জমি
পুত্র- আক্রাম হোসেন .১৭৫ হিস্যায় ০৭.৩৫ শতাংশ জমি
পুত্র- রহিম মিয়া .১৭৫ হিস্যায় ০৭.৩৫ শতাংশ জমি
পুত্র- কামাল হোসেন .১৭৫ হিস্যায় ০৭.৩৫ শতাংশ জমি
পুত্র- বাদশা মিয়া .১৭৫ হিস্যায় ০৭.৩৫ শতাংশ জমি
কন্যা- আনোয়ারা .০৮৭ হিস্যায় ০৩.৬৭ শতাংশ জমি
কন্যা- রহিম বেগম .০৮৮ হিস্যায় ০৩.৬৮ শতাংশ জমি
আকবর আলীর মোট ৪২ শতাংশ জমি তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের মাঝে বন্টন করে দেখানো হলো 

মোট জমি থেকে যেভাবে প্রত্যেক ওয়ারিশের জমি বের করা হলো ঠিক একইভাবে প্রতিটি দাগ থেকে প্রত্যেকের হিস্যা ও জমির পরিমান দিয়ে গুণ করলে সকল ওয়ারিশের প্রতি দাগে কত অংশ পাবে তা বের করা যাবে । 

আবার আসুন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হিস্যা বন্টন করি-- 

উপরে উল্লেখিত খতিয়ান হতে মৃত সাগর আলীর অংশে ৫০.৪০ শতাংশ জমির বন্টন

যেমন ধরুন, সাগর আলী তার অংশের ৫০.৪০ শতাংশ জমি রাখিয়া সাগর আলী অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যুবরন করলে তার পরবর্তী ওয়ারিশ ১ মাতা, ১ পিতা , ২ ভাই ও ২ বোন ওয়ারিশ রেখে যান ৷ এখন উক্ত ওয়ারিশদের হিস্যায় জমি বন্টন করবো- 

বাংলাদেশে যদি কোন ব্যাক্তি অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায় অর্থাৎ তার সংরক্ষণাধীন স্ত্রী না থাকে, তাহলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হবেন মৃত ব্যক্তির পিতা, মাতা, ভাই, বোন । কিন্তু আমাদের সমাজে সবচেয়ে বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয় মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বন্টন নিয়ে । 

যদি মৃত ব্যক্তির পিতা, মাতা, ভাই, বোন অথবা পিতা, মাতা, ভাই, বা পিতা ও ভাই থাকে তাহলে উল্লেখিত মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ভাই, বোন কেউই অংশ পাবে না। মূল কথা হচ্ছে- মৃত ব্যক্তির পিতা জীবিত থাকলে কোন ভাই বোন মৃত ভাইয়ের সম্পত্তিতে অংশীদারি হতে পারবেনা । 

এই বিষয়টা নিয়ে মানুষের মাঝে নানা ধরণের  দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয় । 

আরেকটু বুঝিয়ে বলতে গেলে- পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় তার সন্তান যদি অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায়, তাহলে মৃত সন্তানের অংশের পুরো সম্পত্তি তার পিতার উপর বর্তাবে ।

এখন বুঝা গেলো- মৃত ব্যক্তির পিতা জীবিত থাকলে কোন ভাই বোন তার মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি পাবেন না । 

যদি ভাই বোন মৃত ভাইয়ের উত্তরাধিকার হিসাবে সম্পত্তি পেতে হয় তাহলে মৃত ভাইয়ের পূর্বে পিতার মৃত হতে হবে । তার পর ভাই বোন প্রত্যেকে হিস্যা অনুপাতে অংশীদারি লাভ করতে পারবেন । 

তাহলে পিতা ও মাতা জীবিত থাকলে উভয়ে পাবে পিতা পাবে মৃত সন্তানের মোট সম্পত্তির ২/৩ অংশ এবং মাতা ১/৩ অংশ পাবে 

মৃত সন্তানের অংশ 

যেমন ধরি- সাগর আলীর পিতা - সামসুল হক এবং মাতা- সাবিনা বেগম

সম্পর্ক প্রাপ্য হিস্যা প্রাপ্ত জমি
পিতা- সামসুল হক    ২/৩ অংশ   ৩৩.৬০ শতাংশ জমি
মাতা- সাবিনা বেগম   ১/৩ অংশ    ১৬.৮০ শতাংশ জমি
মোট সাগর আলীর = ৫০.৪০ শতাংশ জমি বন্টন করা হলো 

মৃত ভাইয়ের ওয়ারিশ কারা কারা ?

মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বন্টন নিয়ে প্রকৃত আইন থাকলেও এই বিষয়টা নিয়ে সমাজে নানা ধরণের  দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয় । নিম্নরূপ ভাবে মৃত ভাইয়ের পরবর্তী ওয়ারিশগণ সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়ে থাকেন- 

প্রথমতঃ যদি কোন ভাই বিবাহিত কিন্তু নিঃসন্তান হয়ে মারা যায়, তবে তার ভাই-বোনরা সেই ভাইয়ের  সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।

দ্বিতীয়তঃ যদি কোনো ভাই অবিবাহিত অবস্থায় মারা যায়, তাহলে তার ভাই-বোনরা সেই ভাইয়ের  সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।

তৃতীয়তঃ যদি কোন ভাই বিবাহিত কিন্তু নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায় এবং তার স্ত্রীও মারা যায়, তাহলে তার ভাই বোনেরা ঐ ভাইয়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।

চতুর্থঃ যদি কোনো ভাই অবিবাহিত হয় বা বিবাহিত হয় কিন্তু নিঃসন্তান হয়, সে এবং তার স্ত্রী মৃত হোক বা না হোক এবং তার বোন ছাড়া কোন জীবিত ভাই না থাকলে, তার বোন বা বোনেরা উক্ত ভাইয়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।

পঞ্চমতঃ মৃত ভাইয়ের এক ভাই জীবিত এবং অন্য ভাই মৃত সেক্ষেত্রে কেউ পাবে কেউ পাবেন ।

মৃত ভাইয়ের মেয়ে আছে কিন্তু ছেলে না থাকলে তখন কিভাবে সম্পত্তি কিভাবে পাবেন: নিম্নরুপঃ 

উপরে জানতে পারলাম, মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে, এখন দেখা যাক কোন অবস্থায় কতটুকু পাওয়া যায়, কোন অবস্থায় বঞ্চিত হবেন, চলুন বিস্তারিত দেখা যাক।

যদি আপনার ভাই বিবাহিত অবস্থায় মারা যায় কিন্তু নিঃসন্তান হয় তবে আপনি আপনার মৃত ভাইয়ের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন। যেহেতু কোন সন্তান নেই, তাই আপনার ভাইয়ের স্ত্রী ভাইয়ের সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ (১/৪ অংশ) ভাগ পায়। অবশিষ্ট তিন-চতুর্থাংশ (৩/৪ অংশ) অন্যান্য উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। এখন বলা হচ্ছে, মৃত ভাইয়ের পিতা-মাতা অর্থাৎ আপনার পিতা-মাতা বেঁচে থাকলে তারা তাদের অংশ অনুযায়ী সম্পত্তি পাবেন। এবং তাদের ভাগ হল নিম্নরুপঃ- 

পিতা অংশ
মৃত সন্তানের কোন পুত্র অর্থাৎ নাতি বা নাতির পুত্র বা এইভাবে নীচের দিকে কেউ থাকলে ১/৬
যদি মৃত সন্তানের শুধু কন্যা থাকে অর্থাৎ নাতনি থাকে বা নাতির কন্যা থাকে তাহলে ১/৬ তবে এইক্ষেত্রে নাতনি বা নাতির মেয়েদেরকে দেওয়ার পর আসাবা হিসেবেও বাবা সম্পত্তি পাবে।
মৃত সন্তানের কোন সন্তানই না থাকে, অর্থাৎ নাতি নাতনি নেই, নীচের দিকেও কেউ নেই, তাহলে বাকি অংশীদারদের দেওয়ার পর অবশিষ্ট পুরোটাই বাবা পাবেন।

মাতা অংশ
মৃত সন্তানের সন্তানাদি অর্থাৎ নাতি নাতনি থাকলে দাদা পাবেন ১/৬
মৃত সন্তানের কোন সন্তান না থাকলে কিন্তু দুই বা তার বেশী ভাই বোন থাকলে ১/৬ কিন্তু মৃত সন্তানের কোন সন্তান না থাকলে এবং একের অধিক ভাই বোন না থাকলে মা ১/৩ অংশ পাবেন।
মৃত সন্তানের বাবা থাকলে অর্থাৎ নিজের স্বামী থাকলে এবং মৃত সন্তানের স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকলে স্বামী বা স্ত্রীকে তাদের অংশ দেওয়ার পর ১/৩

 মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বন্টন 

যদি আপনার ভাই অবিবাহিত অবস্থায়  মারা যায়, তাহলে আপনার মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি কিভাবে বন্টন করা হবে?

যেহেতু আপনার ভাই অবিবাহিত তাই স্ত্রীর অংশ বণ্টনের প্রয়োজন নেই। তারপর সরাসরি বাবা-মা ভাই-বোন। এখানেই সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তি তৈরি হয়। 

মৃত ব্যক্তির পিতা, মাতা, ভাই, বোন বা পিতা মাতা ভাই অথবা পিতা ভাই জীবিত থাকলে ভাই বা বোন কেউই সম্পত্তি পাবে না। আরও স্পষ্ট করে বলা যায়, মৃত ব্যক্তির পিতা জীবিত থাকলে মৃতের ভাই-বোনের কেউই অংশ পাবে না।

সুতরাং এটা স্পষ্ট যে, পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় যদি তার সন্তান নিঃসন্তান হয়ে মারা যায়, তাহলে ভাই-বোনের কেউ সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে না। তার সম্পত্তির পুরো অংশ পিতা মাতার আয়ত্তে চলে যাবে। 

অত এব, মৃত ভাই বা বোনের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে হলে, মৃত ভাইয়ের মৃত্যুর আগে পিতাকে অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। 

এখন আসুন, যে ভাই বিবাহিত কিন্তু তার কোন সন্তান নেই, সে এবং তার স্ত্রী মারা গেছে তখন স্ত্রীর অংশ বণ্টনের প্রয়োজন নেই। তারপর সরাসরি বাবা-মা, আর বাবা না থাকলে মা, ভাই, বোন। মাকে দেওয়ার পরে, বাকি সম্পত্তি ২:১ অনুপাতে ভাই ও বোনের মধ্যে ভাগ করা হবে।

আবার, 

যদি কোন ভাই অবিবাহিত বা বিবাহিত কিন্তু নিঃসন্তান হয়, সে এবং তার স্ত্রী মৃত হোক বা জীবিত হোক এবং তার যদি অন্য কোন জীবিত ভাই না থাকে শুধু বোন থাকলে, তার বোন বা বোনেরা উক্ত ভাইয়ের  সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে।

মনে রাখতে হবে যে, মৃত ভাইয়ের যদি কোন জীবিত ভাই না থাকে এবং শুধুমাত্র একটি বোন থাকে তবে সে পাবে মোট সম্পত্তির অর্ধেক পাবে এবং যদি একাধিক বোন থাকে তবে সে পাবে মোট সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ (২/৩) অংশ সম্পত্তি একাধিক বোনের মাঝে উল্লিখিত ২/৩ অংশ সমানভাবে বিতরণ করা হবে।

এবার ধরুনআপনার মৃত ভাইয়ের একটি জীবিত ভাই আছে অর্থাৎ আপনি আছেন এবং আপনার  দুই বোন আছে, তাহলে মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি কীভাবে বন্টন হবে? 

এখানে উত্তরাধিকার আইনের একটি সূত্র হচ্ছে-  কোন ব্যক্তির মৃত্যুর সময় শুধুমাত্র যে কয়জন উত্তরাধিকারী জীবিত থাকবেন তখন শুধুমাত্র জীবিত উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন করা হবে। কোন মৃত উত্তরাধিকারীর মধ্যে সম্পত্তি বন্টন করা হয় না। 

অতএব, আপনার মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি বণ্টনের সময় আপনার মৃত ভাই বা বোন তার কোনো  ওয়ারিশ উত্তরাধিকার পাবেন না। 

তবে হ্যাঁ, যদি আপনার মৃত ভাইয়ের উত্তরাধিকারী হিসাবে আপনার কোন জীবিত ভাই না থাকে, তবে আপনার ছেলেরা সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। 

কিন্তু, উত্তরাধিকার হিসাবে, এক ভাই জীবিত, এবং অন্য ভাই একটি পুত্রকে জীবিত রেখে মারা গেলে, সেক্ষেত্রে জীবিত ভাই সম্পত্তি পাবে, মৃত ভাইয়ের পুত্র সম্পত্তি পাবে না। 

মূল কথা হচ্ছে-  ভাই বেঁচে থাকলে ভাইয়ের ছেলে বঞ্চিত হবে আর ভাই না থাকলে শুধু ভাইয়ের ছেলেই উত্তরাধিকার পাবে। 

আরও সহজ করে বললে, চাচা ও ভাতিজা একই সাথে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারে না। তবে ফুফু এবং ভাতিজা একই সাথে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারে।

আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো

মৃত ভাইয়ের কোন ছেলে সন্তান না থাকলে জীবিত ভাই বা ভাইয়ের ছেলে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবে। কারণ উপরে আমরা এতক্ষন আলোচনা করে আসছি মৃত ভাই অবিবাহিত বা বিবাহিত কিন্তু সন্তানাদি যদি না থাকে 

এখন আলোচনা করবো কোন মৃত ভাইয়ের যদি শুধু কন্যা সন্তান থাকে তাহলে- একমাত্র কন্যা সন্তান হলে মোট সম্পত্তির অর্ধেক পাবে এবং একাধিক কন্যা থাকলে মোট সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ (২/৩) পাবে। এবং উক্ত দুই-তৃতীয়াংশ (২/৩) সম্পত্তি একাধিক কন্যার ক্ষেত্রে সমানভাবে ভাগ করা হবে। 

আর স্ত্রী থাকলে ১/৮ অংশ পাবে, স্ত্রী ও কন্যা উভয়কে দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি যা থাকবে মৃতের ভাই, জীবিত ভাই থাকলে ভাই এবং ভাই জীবিত না থাকলে মৃত ভাইয়ের ছেলে তা পাবে। 

কতটা পাবে তা হিস্যা হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি, তবে আসাবা হিসাবে, অর্থাৎ স্ত্রী ও কন্যা উভয়কে দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তি যা থাকবে তাই পাবে । 

এটাই হলো মৃত ভাইয়ের সম্পত্তি থেকে কীভাবে সম্পত্তি পেতে পারেন এবং কোন কোন অবস্থায় পেতে পারেন তা জানা গেলো। 

ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url