একই ব্যক্তির দুই নামের এফিডেভিট

একই ব্যক্তির দুই নামের এফিডেভিট

এফিডেভিট কি? 

এফিডেভিট একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ হলো হলফনামা । এফিডেভিট বা হলফনামা হল সত্যিকার অর্থে একটি লিখিত প্রমাণ যা স্বেচ্ছায় একজন ব্যক্তি বা জবানবন্দীর দ্বারা একটি শপথ বা অঙ্গীকারের অধীনে করা হয় যা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদিত একজন ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত হয়।

একজন মানুষ তার পরিচয় পত্রের বা যে কোনো ধরনের পরিচিতির কোন প্রকার পরিবর্তন বা সংশোধন করতে চাইলে তাকে সেটি ঘোষণার মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় লিখিত ভাবে সম্পন্ন করতে হবে।  

সহজ করে বলতে গেলে, পরিচিতির যে বিষয়গুলো পরিবর্তনযোগ্য সেগুলোর কোনো পরিবর্তন করা হলে সেটি মৌখিক ভাবে না করে লিখিতভাবে আইনানুগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াটিকেই আমরা এফিডেভিট বা হলফনামা বলে থাকে। 

কিভাবে এফিডেভিট করতে হয়?

এফিডেভিট বা হলফনামা সাধারণত ৩০০/- টাকার নন- জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সম্পন্ন করতে হয় । ৩০০/- টাকার ষ্ট্যাম্পের মধ্যে দেখা যায় সাধারণত ১০০ টাকার ৩ টি ষ্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

প্রয়োজনে আপনার যদি বেশী লেখার জন্য পৃষ্ঠা সংখ্যা বেশি লাগে সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলে আরো কম দামের ষ্ট্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, ৫০/- টাকার ২ টির সাথে ১০০/- টাকার ২টি ষ্ট্যাম্প মিলিয়ে ৪ পাতার এফিডেভিট বা হলফনামা সম্পন্ন করতে পারবেন। মোটকথা যত পৃষ্ঠাই হোক সব মিলিয়ে এফিডেভিট বা হলফনামাটি যেন ৩০০/- টাকার ষ্ট্যাম্পে হয়। তবে, বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ৩০০/- টাকার ষ্ট্যাম্পের পরিবর্তে ৫০০/- টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এফিডেভিট বা হলফনামা করতে হবে।

দুই নামের এফিডেভিট কিভাবে লেখা ?

বরাবর,

বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, জামালপুর ৷

এফিডেভিট

        এফিডিভিটকারীঃ মোঃ হারুনুর রশিদ, পিতা- মৃত বাহাজ উদ্দিন ওরফে রমিজ উদ্দিন, মাতা- মৃত সালেমা বেগম, জন্ম তারিখ- ৫/৭/১৯৮৯ ইং, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- 6826391037, ধর্ম- ইসলাম, পেশা- ব্যবসা, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, গ্রাম- মাহমুদপুর, ডাকঘর- মাহমুদপুর, উপজেলা- মেলান্দহ, জেলা- জামালপুর ৷

          আমি ধর্ম্মত প্রতিজ্ঞা পূর্বক এই মর্মে এফিডেভিট দ্বারা ঘোষণা করিতেছি যে, আমার পিতা মৃত বাহাজ উদ্দিন ওরফে রমিজ উদ্দিন, এর পিতা- মৃত বাদশা আলী, সাং- মাহমুদপুর, ডাকঘর- মাহমুদপুর, উপজেলা- মেলান্দহ, জেলা- জামালপুর তিনি দীর্ঘ দিন পূর্বে মৃত্যুবরণ করিয়াছেন ৷ আমার পিতার নাম আমার জাতীয় পরিচয় পত্রে বাহাজ উদ্দিন এবং পর্চায়/ খতিয়ানে আমার পিতার নাম রমিজ উদ্দিন লিপিবদ্ধ হইয়াছে ৷ বস্তুতঃ বাহাজ উদ্দিন ওরফে রমিজ উদ্দিন উভয় নামেই পরিচিতি ছিল ৷ প্রকৃত পক্ষে বাহাজ উদ্দিন ওরফে রমিজ উদ্দিন উভয় নামের একই ব্যক্তি ৷ যাহা সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে ৷

          অদ্য আমি আপনার কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হইয়া স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে কাহারো বিনা প্ররোচনায় অত্র এফিডেভিট সম্পাদন করিলাম ৷                                                                                                         সত্যতা

                           আমি ধর্ম প্রতিজ্ঞা পূর্বক বলিতেছি যে, অত্র এফিডেভিটের 

                         যৎ যাবতীয় বর্ণনা আমার জ্ঞান ও বিশ্বাসমতে সত্য জানিয়া

                         অত্র সত্যতায় নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম ৷


                                                                এফিডেভিটকারীর স্বাক্ষরঃ

                                এফিডেভিটকারী আমার সম্মুখে তাহার নিজ নাম স্বাক্ষর 

                                করিয়াছে ৷ আমি তাহাকে সনাক্ত করিলাম ৷


                                                                                        এডভোকেট
                                                                             জজ কোর্ট, জামালপুর ৷


উল্লেখ্য, আপনি নিজে বা আপনার সাথে যে বা যারা কোন ঘোষণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে এফিডেভিট বা হলফনামা প্রস্তুত করবেন, তার বা তাদের সকলের পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি দিতে হবে এবং সেখানে নিজের স্বাক্ষর দিতে হবে।

এফিডেভিট বা হলফনামাতে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে শনাক্ত করতে হবে যেখানে আইনজীবীকে আইনজীবী সমিতির সদস্য নাম্বার স্বাক্ষর দেওয়ার পাশাপাশি আইনজীবীর সামনেই এই এফিডেভিট বা হলফনামা সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করতে হবে।

ভালো লাগলে পোস্টটি শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url