মর্টগেজ দলিল বা বন্ধকী দলিল কি
ব্যাংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করার জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানে নিজের স্থাবর সম্পত্তি জমা রেখে তার বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করাকেই মূলত বন্ধকী ঋণ বলা হয় ।
আর এই ঋণ গ্রহণের জন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যে চুক্তি সম্পাদন করে আইনি দলিল প্রস্তুত করা হয় তাকে মর্টগেজ দলিল বা বন্ধকী দলিল বলে ।
মর্টগেজ দলিল কি
যে ডকুমেন্ট দ্বারা ঋণ হিসাবে অগ্রিম প্রদত্ত বা ভবিষ্যতে প্রদেয় ঋণ পরিশোধের নিশ্চয়তা ( যা ভবিষ্যতে অর্থ /ঋণ পরিশোধের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।
যাতে আর্থিক দায় সৃস্টি করতে পারে এমন পরিস্থিতির বিপরীতে অঙ্গীকার হিসাবে নির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির স্বার্থ হস্তান্তর করা হয় তাকেই মর্টগেজ বা বন্ধকী দলিল বলে ।
কিভাবে বন্ধকী ঋণ নেয়া হয়?
সাধারণত নতুন কোনো উদ্যোগে আর্থিক সচ্ছলতার জন্য বন্ধকী ঋণ নেয়া হয়ে থাকে । অনেকেই সম্পত্তি কেনার জন্য এই বন্ধকী ঋণ নিয়ে থাকেন । এতে করে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যে সম্পত্তির বিপরীতে ঋণ গ্রহণ করছেন সেই সম্পত্তি টি বিক্রয় করার প্রয়োজন হয় না । ঋণ পরিশোধ করার পর পুনরায় সেটার মালিকানা ফেরত পাওয়া যায় ।
বিভিন্ন কারণে বন্ধকী ঋণ গ্রহণ করতে পারেন; যেমন- বাসা/বাড়ি নির্মাণের জন্য, ব্যাবসায়িক উন্নয়নের জন্য, মূল্যবান সম্পত্তি ক্রয় করার জন্য, উচ্চশিক্ষা লাভে বিদেশ গমনের জন্য ইত্যাদি।
বন্ধক রাখার উপযুক্ত প্রপার্টি এবং প্রাপ্য লোনের পরিমান
যে কোন ধরণের স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখেই মর্টগেজ লোন নেয়া সম্ভব। নিজ মালিকানায় থাকা বাড়ি, যে কোন জায়গা বা প্লট, কমার্শিয়াল বা ইন্ড্রাস্টিয়াল প্রপার্টিও বন্ধক রাখা যায়। এমনকি কোন নির্মানাধীন প্রপার্টিও বন্ধকী প্রপার্টি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
এক্ষেত্রে খুব কমন একটি প্রশ্ন হল বন্ধকী প্রপার্টির বিপরীতে কী পরিমাণ লোন পাওয়া সম্ভব? সাধারণত বন্ধকী সম্পত্তির মূল্যের বিপরীতে ৫০% থেকে ৭৫% পর্যন্ত ঋণ পাওয়া সম্ভব। তবে মোটামুটি ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই হল ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড।
কোন স্থাবর সম্পত্তির মূলাই পূর্ব নির্ধারিত নয়। তাই প্রতিনিয়ত ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পত্তির মূল্যায়ন এবং যাচাইবাছাই করা হয়। এই প্রপার্টি ভ্যালুয়েশন বা মূল্যায়নের পরেই নির্ধারিত হয় কোন প্রপার্টির মূল্য এবং সেই মূল্যের বিপরীতেই লোন ইস্যু করা হয়।
বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ রিয়েল এস্টেট সল্যুশন প্রোভাইডার বিপ্রপার্টি এই প্রপার্টি ভ্যানুয়েশন বা মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও পারদর্শী। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া এক চুক্তি অনুসারে খ্যাতিমান আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি-এর হোমলোনের ক্ষেত্রে প্রপাটি ভ্যানুয়েশন এবং ভ্যালিডেশনের কাজ করবে বিপ্রপার্টি D
বন্ধকী ঋণের উপর সুদের হার
মর্টগেজের উপর সুদের হার সাধারণত ১২% থেকে ১৫% এর মধ্যে হয়ে থাকে। অবশ্য অনেক সময় অন্যান্য সূচক যেমন ডাউন পেমেন্ট, কত বছরের মর্টগেজ রাখা হচ্ছে, এসবের উপরও নির্ভর করে। তবে যেকোন পার্সনাল লোনের তুলনায় বন্ধকী ঋণের সুদের হার সাধারণত কম হয়ে থাকে।
এজন্য সম্ভ্যবা ক্ষেত্রে বেশিরভাগ গ্রাহকই মর্টগেজ লোন নেয়াকে উপযুক্ত করেন। মোটের উপর হোমলোনের পর সবচেয়ে কম সুদের হার পাওয়া যায় বন্ধকী ঋণ নেবার ক্ষেত্রেই। আপনি চাইলেই বিপ্রপার্টির লোন ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে হিসাব করতে পারেন মর্টগেজের উপর সুদের হার সহ অন্যান্য তথা।
বন্ধকী ঋণ দেবার পূর্বে ব্যাংক যা খতিয়ে দেখে
যে কোন লোন প্রসেসিং এর ক্ষেত্রেই ব্যাংক বা ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অনেক কিছু যাচাই বাছাই করে দেখে। বন্ধকী ঋণ দেবার পূর্বে সাধারণত যেসব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়
মাসিক এবং বাৎসরিক আয় গত ৩ বছরে প্রদত্ত কর এবং ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টিন নাম্বার) পেশা, কর্ম অভিজ্ঞতা, বর্তমান কর্মরত প্রতিষ্ঠান,
বন্ধকী সম্পত্তির মূল্য- চলমান বা অপরিশোধিত সোন (যদি থাকে)
এছাড়া লোনের আপ্লিক্যান্ট (ঋণগ্রহীতা) এর বয়স এবং উপার্জনও খতিয়ে দেখা হয় ব্যাংক কর্তৃক। মূলত প্রতিটি ব্যাংকই এই বিষয়গুল্যে আচাই বাছাই করে তবেই লোনের অনুমোদন দেয়। ব্যাংক ভেদে এতে সামান্য হেরফের হতে পারে। বিপ্রপার্টির সাথে রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের এক্সক্লুসিভ সব চুক্তি।
বন্ধকী ঋণ নিয়ে এই ছিল আজকের লেখা। এখানে সাধারণত জানতে চাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এর বাইরেও কিছু জানার থাকলে মন্তব্যের ঘরে আনতে চাইতে পারেন।